BDELIBRARY





উৎসর্গ

রবীন্দ্র রচনাবলী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর




অচির বসন্ত হায় এল, গেল চলে
অত চুপি চুপি কেন কথা কও
আকাশ-সিন্ধু-মাঝে এক ঠাঁই
আছি আমি বিন্দুরূপে, হে অন্তরযামী
আজ মনে হয় সকলেরই মাঝে
আজি হেরিতেছি আমি
আজিকে গহন কালিমা লেগেছে গগনে
আপনারে তুমি করিবে গোপন
আমাদের এই পল্লিখানি পাহাড় দিয়ে ঘেরা
আমার খোলা জানালাতে
আমার মাঝারে যে আছে কে গো সে
আমি চঞ্চল হে
আমি যারে ভালোবাসি সে ছিল এই গাঁয়ে
আলো নাই, দিন শেষ হল, ওরে
আলোকে আসিয়া এরা লীলা করে যায়
উৎসর্গ (উৎসর্গ)
ওরে আমার কর্মহারা, ওরে আমার সৃষ্টিছাড়া
ওরে পদ্মা, ওরে মোর রাক্ষসী প্রেয়সী
কত দিবা কত বিভাবরী
কাল যবে সন্ধ্যাকালে বন্ধুসভাতলে
কী কথা বলিব বলে
কুঁড়ির ভিতর কাঁদিছে গন্ধ অন্ধ হয়ে
কেবল তব মুখের পানে চাহিয়া
ক্ষান্ত করিয়াছ তুমি আপনারে
চিরকাল একি লীলা গো
তুমি আছ হিমাচল ভারতের অনন্তসঞ্চিত
তোমার বীণায় কত তার আছে
তোমারে পাছে সহজে বুঝি
তোমায় চিনি বলে আমি করেছি গরব
দিয়েছ প্রশ্রয় মোরে, করুণানিলয়
দুয়ারে তোমার ভিড় ক’রে যারা আছে
দেখো চেয়ে গিরির শিরে
ধূপ আপনারে মিলাইতে চাহে গন্ধে
নব বৎসরে করিলাম পণ
না জানি কারে দেখিয়াছি
নানা গান গেয়ে ফিরি নানা লোকালয়
পথের পথিক করেছ আমায়
পাগল হইয়া বনে বনে ফিরি
বাহির হইতে দেখো না এমন করে
বিরহবৎসর-পরে মিলনের বীণা
ভারতসমুদ্র তার বাষ্পোচ্ছ্বাস নিশ্বসে গগনে
ভারতের কোন্‌ বৃদ্ধ ঋষির তরুণ মূর্তি তুমি
ভোরের পাখি ডাকে কোথায়
মন্ত্রেসে যে পূত রাখীররাঙা সুতো
মোর কিছু ধন আছে সংসারে
যদি ইচ্ছা কর তবে কটাক্ষে হে নারী
রোগীর শিয়রে রাত্রে একা ছিনু জাগি
শূন্য ছিল মন
সব ঠাঁই মোর ঘর আছে
সাঙ্গ হয়েছে রণ
সে তো সে দিনের কথা, বাক্যহীন যবে
সেদিন কি তুমি এসেছিলে ওগো
হায় গগন নহিলে তোমারে ধরিবে কে বা
হে জনসমুদ্র, আমি ভাবিতেছি মনে
হে নিস্তব্ধ গিরিরাজ
হে পথিক, কোন্‌খানে চলেছ কাহার পানে
হে বিশ্বদেব, মোর কাছে তুমি
হে ভারত, আজি নবীন বর্ষে
হে রাজন তুমি আমারে
হে হিমাদ্রি, দেবতাত্মা, শৈলে শৈলে আজিও তোমার