গীতালি
রবীন্দ্র রচনাবলী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
অগ্নিবীণা বাজাও তুমি
অচেনাকে ভয় কী আমার ওরে
অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো
আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে
আঘাত করে নিলে জিনে
আজি নির্ভয়নিদ্রিত ভুবনে জাগে কে জাগে
আপন হতে বাহির হয়ে
আবার যদি ইচ্ছা কর আবার আসি ফিরে
আবার শ্রাবণ হয়ে এলে ফিরে
আমার বোঝা এতই করি ভারী
আমার সকল রসের ধারা
আমার সুরের সাধন রইল পড়ে
আমার আর হবে না দেরি
আমি অধম অবিশ্বাসী
আমি পথিক, পথ আমারি সাথি
আমি যে আর সইতে পারি নে
আমি হৃদয়েতে পথ কেটেছি
আলো যে আজ গান করে মোর প্রাণে গো
আলো যে যায় রে দেখা
আশীর্বাদ
এ দিন আজি কোন্ ঘরে গো খুলে দিল দ্বার
এই আবরণ ক্ষয় হবে গো ক্ষয় হবে
এই কথাটা ধরে রাখিস
এই তীর্থ-দেবতার ধরণীর মন্দির-প্রাঙ্গণে
এই নিমেষে গণনাহীন নিমেষ গেল টুটে
এই যে কালো মাটির বাসা
এই শরৎ-আলোর কমল-বনে
এক হাতে ওর কৃপাণ আছে
এখানে তো বাঁধা পথের
এতটুকু আঁধার যদি
এদের পানে তাকাই আমি
এবার আমায় ডাকলে দূরে
ও আমার মন যখন জাগলি না রে
ও নিঠুর, আরো কি বাণ
ওই-যে সন্ধ্যা খুলিয়া ফেলিল তার
ওই অমল হাতে রজনী প্রাতে
ওগো আমার প্রাণের ঠাকুর
ওগো আমার হৃদয়বাসী
ওরে ভীরু তোমার হাতে
কাঁচা ধানের ক্ষেতে যেমন
কাণ্ডারী গো, যদি এবার
কূল থেকে মোর গানের তরী
কেমন করে এমন বাধা ক্ষয় হবে
কেমন করে তড়িৎ-আলোয়
কোন্ বরতা পাঠালে মোর পরানে
ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু
খুশি হ তুই আপন মনে
গতি আমার এসে ঠেকে যেথায় শেষে
ঘরের থেকে এনেছিলেম
ঘুম কেন নেই তোরি চোখে
চোখে দেখিস, প্রাণে কানা
জাগো নির্মল নেত্রে রাত্রির পরপারে
জীবন আমার যে অমৃত
তব গানের সুরে হৃদয় মম রাখো হে রাখো ধরে
তুমি আড়াল পেলে কেমনে
তোমার কাছে এ বর মাগি
তোমার কাছে চাই নে আমি অবসর
তোমার দুয়ার খোলার ধ্বনি
তোমার ভুবন মর্মে আমার লাগে
তোমার মোহন রূপে কে রয় ভুলে
তোমার এই মাধুরী ছাপিয়ে আকাশ ঝরবে
তোমার খোলা হাওয়া লাগিয়ে পালে
তোমায় ছেড়ে দূরে চলার
তোমায় সৃষ্টি করব আমি
দুঃখ এ নয়, সুখ নহে গো
দুঃখ যদি না পাবে তো
দুঃখ যে তোর নয় রে চিরন্তন
দুঃখের বরষায় চক্ষের জল যেই নামল
না গো, এই যে ধুলা আমার না এ
না বাঁচাবে আমায় যদি
না রে, তোদের ফিরতে দেব না রে
না রে, না রে, হবে না তোর স্বর্গসাধন
নাই কি রে তীর, নাই কি রে তোর তরী
নাই বা ডাক, রইব তোমার দ্বারে
পথ চেয়ে যে কেটে গেল
পথ দিয়ে কে যায় গো চলে
পথে পথেই বাসা বাঁধি
পথের সাথি, নমি বারম্বার
পান্থ তুমি, পান্থজনের সখা হে
পুষ্প দিয়ে মার যারে
প্রভু আমার, প্রিয় আমার, পরমধন হে
প্রেমের প্রাণে সইবে কেমন করে
ফুল তো আমার ফুরিয়ে গেছে
বলো, আমার সনে তোমার কী শত্রুতা
বাঁধা দিলে বাধবে লড়াই
বাজিয়েছিলে বীণা তোমার
বিশ্বজোড়া ফাঁদ পেতেছ
বৃন্ত হতে ছিন্ন করি শুভ্র কমলগুলি
ব্যথার বেশে এল আমার দ্বারে
ভেঙেছে দুয়ার, এসেছ জ্যোতির্ময়
মনকে হেথায় বসিয়ে রাখিস নে
মালা হতে খসে-পড়া ফুলের একটি দল
মুদিত আলোর কমল-কলিকাটিরে
মেঘ বলেছে যাব যাব
মোর হৃদয়ের গোপন বিজন ঘরে
মোর মরণে তোমার হবে জয়
যখন তুমি বাঁধছিলে তার
যখন তোমায় আঘাত করি
যদি আমায় তুমি বাঁচাও তবে
যা দেবে তা দেবে তুমি আপন হাতে
যাস নে কোথাও ধেয়ে
যে থাকে থাক্-না দ্বারে
যে দিল ঝাঁপ ভবসাগর-মাঝখানে
যেতে যেতে একলা পথে
যেতে যেতে চায় না যেতে
লক্ষ্মী যখন আসবে তখন
শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি
শুধু তোমার বাণী নয় গো
শেষ নাহি যে শেষ কথা কে বলবে
সন্ধ্যা হল, একলা আছি ব’লে
সন্ধ্যাতারা যে ফুল দিল তোমার চরণ-তলে
সরিয়ে দিয়ে আমার ঘুমের
সহজ হবি সহজ হবি
সারা জীবন দিল আলো
সুখে আমায় রাখবে কেন
সুখের মাঝে তোমায় দেখেছি
সেই তো আমি চাই
হিসাব আমার মিলবে না তা জানি
হৃদয় আমার প্রকাশ হল