BDELIBRARY





নাট্যগীতি

রবীন্দ্র রচনাবলী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর




অভয় দাও তো বলি আমার
অসুন্দরের পরম বেদনায় সুন্দরের আহ্বান
আঁধার শাখা উজল করি হরিত-পাতা-ঘোমটা পরি
আজ আসবে শ্যাম গোকুলে ফিরে
আজি উন্মাদ মধুনিশি ওগো চৈত্রনিশীথশশী
আমরা বসব তোমার সনে
আমাদের সখীরে কে নিয়ে যাবে রে
আমি কেবল ফুল জোগাব
আর কি আমি ছাড়ব তোরে
আয় রে আয় রে সাঁঝের বা, লতাটিরে দুলিয়ে যা
ইচ্ছে ! –ইচ্ছে
এই তো ভরা হল ফুলে ফুলে ফুলের ডালা
একদা প্রাতে কুঞ্জতলে অন্ধ বালিকা
এতদিন পরে মোরে
এবার চলিনু তবে
ও কী কথা বল সখী, ছি ছি, ও কথা মনে এনো না
ওই জানালার কাছে বসে আছে করতলে রাখি মাথা
ওগো দয়াময়ী চোর, এত দয়া মনে তোর
ওর মানের এ বাঁধ টুটবে না কি টুটবে না
কত দিন একসাথে ছিনু ঘুমঘোরে
কথা কোস্‌ নে লো রাই, শ্যামের বড়াই বড়ো বেড়েছে
কবরীতে ফুল শুকালো
কাছে তার যাই যদি কত যেন পায় নিধি
কাজ ভোলাবার কে গো তোরা
কার হাতে যে ধরা দেব, প্রাণ
কিছুই তো হল না
কী করিব বলো, সখা, তোমার লাগিয়া
কী জানি কী ভেবেছ মনে
কে তুমি গো খুলিয়াছ স্বর্গের দুয়ার
কেন রে চাস ফিরে ফিরে, চলে আয় রে চলে আয়
কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা মনে মনে
ক্ষমা করো মোরে সখী, শুধায়ো না আর
খেলা কর্ খেলা কর্ তোরা কামিনীকুসুমগুলি
চিঁড়েতন হর্তন ইস্কাবন
চির-পুরানো চাঁদ
জ্বল্‌ জ্বল্‌ চিতা, দ্বিগুণ দ্বিগুণ
জয় জয় জয় হে জয় জ্যোতির্ময়
ঝর ঝর রক্ত ঝরে কাটা মুণ্ড বেয়ে
তরুতলে ছিন্নবৃন্ত মালতীর ফুল
তুই রে বসন্তসমীরণ
তুমি আছ কোন্‌ পাড়া ? তোমার পাই নে যে সাড়া
তুমি পড়িতেছ হেসে তরঙ্গের মতো এসে
তোমার কটি-তটের ধটি কে দিল রাঙিয়া
তোমায় সাজাব যতনে কুসুমে রতনে
তোলন-নামন পিছন-সামন
থাকতে আর তো পারলি নে মা, পারলি কই
দেখব কে তোর কাছে আসে
নহ মাতা, নহ কন্যা, নহ বধূ, সুন্দরী রূপসী হে নন্দনবাসিনী উর্বশী
না সখা, মনের ব্যথা কোরো না গোপন
নাচ্‌ শ্যামা, তালে তালে
নীরব রজনী দেখো মগ্ন জোছনায়
পথে যেতে তোমার সাথে মিলন হল দিনের শেষে
পোড়া মনে শুধু পোড়া মুখখানি জাগে রে
প্রিয়ে, তোমার ঢেঁকি হলে যেতেম বেঁচে
বলেছিল ‘ধরা দেব না’, শুনেছিল সেই বড়াই
বসন্তপ্রভাতে এক মালতীর ফুল
বাঁধন কেন ভূষণ-বেশে
বাজে রে বাজে ডমরু বাজে হৃদয়মাঝে, হৃদয়মাঝে
বাজে রে বাজে রে
বাহির হলেম আমি আপন ভিতর হতে
বিপাশার তীরে ভ্রমিবারে যাই
বুঝেছি বুঝেছি সখা, ভেঙেছে প্রণয়
বড়ো থাকি কাছাকাছি
ভাঙা দেউলের দেবতা
ভালো যদি বাস, সখী, কী দিব গো আর
ভালোবাসিলে যদি সে ভালো না বাসে কেন সে দেখা দিল
ভিক্ষে দে গো, ভিক্ষে দে
ভুলে ভুলে আজ ভুলময়
মধুঋতু নিত্য হয়ে রইল তোমার মধুর দেশে
মধুর মিলন। হাসিতে মিলেছে হাসি, নয়নে নয়ন
মা আমার, কেন তোরে ম্লান নেহারি
যখন দেখা দাও নি, রাধা, তখন বেজেছিল বাঁশি
যে ভালোবাসুক সে ভালোবাসুক সজনি লো, আমরা কে
যেখানে রূপের প্রভা নয়ন-লোভা
যোগী হে, কে তুমি হৃদি-আসনে
শোন্‌ রে শোন্‌ অবোধ মন
সখা, সাধিতে সাধাতে কত সুখ
সখী, ভাবনা কাহারে বলে। সখী, যাতনা কাহারে বলে
সখী, আর কত দিন সুখহীন শান্তিহীন
সাধ ক’রে কেন, সখা, ঘটাবে গেরো
সে আসি কহিল, ‘প্রিয়ে, মুখ তুলে চাও
হা-আ-আ-আই
হৃদয়ে রাখো গো দেবী, চরণ তোমার