BDELIBRARY





পূজা

রবীন্দ্র রচনাবলী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর




অকারণে অকালে মোর পড়ল যখন ডাক
অগ্নিবীণা বাজাও তুমি কেমন ক’রে
অচেনাকে ভয় কী আমার ওরে
অনিমেষ আঁখি সেই কে দেখেছে
অনেক দিনের শূন্যতা মোর ভরতে হবে
অনেক দিয়েছ নাথ
অন্তর মম বিকশিত করো অন্তরতর হে
অন্তরে জাগিছ অন্তরযামী
অন্ধকারের উৎস-হতে উৎসারিত আলো
অন্ধকারের মাঝে আমায় ধরেছ দুই হাতে
অন্ধজনে দেহো আলো
অমন আড়াল দিয়ে লুকিয়ে গেলে চলবে না
অমল কমল সহজে জলের কোলে আনন্দে রহে ফুটিয়া
অমৃতের সাগরে আমি যাব যাব রে
অরূপ বীণা রূপের আড়ালে লুকিয়ে বাজে
অরূপ, তোমার বাণী
অল্প লইয়া থাকি, তাই মোর যাহা যায় তাহা যায়
অশ্রুনদীর সুদূর পারে ঘাট দেখা যায় তোমার দ্বারে
অসীম আকাশে অগণ্য কিরণ, কত গ্রহ উপগ্রহ
অসীম কালসাগরে ভুবন ভেসে চলেছে
অসীম ধন তো আছে তোমার, তাহে সাধ না মেটে
আঁখিজল মুছাইলে জননী
আঁধার এল ব’লে
আঁধার রজনী পোহালো, জগত পূরিল পুলকে
আঁধার রাতে একলা পাগল যায় কেঁদে
আকাশ জুড়ে শুনিনু ওই বাজে
আকাশে দুই হাতে প্রেম বিলায় ও কে
আগুনে হল আগুনময়
আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে
আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে।
আঘাত করে নিলে জিনে
আছ অন্তরে চিরদিন, তবু কেন কাঁদি
আছ আপন মহিমা লয়ে মোর গগনে রবি
আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে
আজ জ্যোত্‍‌স্নারাতে সবাই গেছে বনে
আজকে মোরে বোলো না কাজ করতে
আজি বিজন ঘরে নিশীথরাতে আসবে যদি শূন্য হাতে
আজি কোন্‌ ধন হতে বিশ্বে আমারে
আজি নাহি নাহি নিদ্রা আঁখিপাতে
আজি নির্ভয়নিদ্রিত ভুবনে জাগে, কে জাগে
আজি প্রণমি তোমারে চলিব, নাথ, সংসারকাজে
আজি এ আনন্দসন্ধ্যা সুন্দর বিকাশে, আহা
আজি বহিছে বসন্তপবন সুমন্দ তোমারি সুগন্ধ হে
আজি মম জীবনে নামিছে ধীরে
আজি মম মন চাহে জীবনবন্ধুরে
আজি মর্মরধ্বনি কেন জাগিল রে
আজি যত তারা তব আকাশে
আজি শুভ শুভ্র প্রাতে কিবা শোভা দেখালে
আজি হেরি সংসার অমৃতময়
আজিকে এই সকালবেলাতে
আনন্দ তুমি স্বামী, মঙ্গল তুমি
আনন্দ রয়েছে জাগি ভুবনে তোমার
আনন্দগান উঠুক তবে বাজি
আনন্দধারা বহিছে ভুবনে
আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর
আপন হতে বাহির হয়ে বাইরে দাঁড়া
আপনাকে এই জানা আমার ফুরাবে না
আপনারে দিয়ে রচিলি রে কি এ আপনারই আবরণ
আপনি আমার কোন্‌খানে
আবার এরা ঘিরেছে মোর মন
আবার যদি ইচ্ছা কর আবার আসি ফিরে
আমরা তারেই জানি তারেই জানি সাথের সাথী
আমাদের খেপিয়ে বেড়ায় যে কোথায় লুকিয়ে থাকে রে
আমার ব্যথা যখন আনে আমায় তোমার দ্বারে
আমার মন, যখন জাগলি না রে
আমার হৃদয় তোমার আপন হাতের দোলে দোলাও
আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে
আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার চরণধুলার তলে
আমার যে গান তোমার পরশ পাবে
আমার আঁধার ভালো, আলোর কাছে বিকিয়ে দেবে আপনাকে সে
আমার পথে পথে পাথর ছড়ানো
আমার ভাঙা পথের রাঙা ধুলায় পড়েছে কার পায়ের চিহ্ন
আমার যাবার বেলাতে
আমার সত্য মিথ্যা সকলই ভুলায়ে দাও
আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে
আমার আর হবে না দেরি
আমার খেলা যখন ছিল তোমার সনে
আমার মন তুমি, নাথ, লবে হ’রে
আমার সকল দুখের প্রদীপ জ্বেলে
আমার সকল দুখের প্রদীপ জ্বেলে
আমার কণ্ঠ তাঁরে ডাকে
আমার না-বলা বাণীর ঘন যামিনীর মাঝে
আমার যে আসে কাছে, যে যায় চলে দূরে
আমার সকল কাঁটা ধন্য করে ফুটবে ফুল ফুটবে
আমার হৃদয়সমুদ্রতীরে কে তুমি দাঁড়ায়ে
আমার এ ঘরে আপনার করে
আমার এই পথ-চাওয়াতেই আনন্দ
আমার গোধূলিলগন এল বুঝি কাছে গোধূলিলগন রে
আমার ঢালা গানের ধারা সেই তো তুমি পিয়েছিলে
আমার প্রাণে গভীর গোপন মহা-আপন সে কি
আমার বাণী আমার প্রাণে লাগে
আমার বিচার তুমি করো তব
আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
আমার মাঝে তোমারি মায়া জাগালে তুমি কবি
আমার মিলন লাগি তুমি
আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে
আমার মুখের কথা তোমার
আমার যা আছে আমি সকল দিতে পারি নি তোমারে নাথ
আমার যে সব দিতে হবে সে তো আমি জানি
আমার সকল রসের ধারা
আমার সুরে লাগে তোমার হাসি
আমারে কে নিবি ভাই, সঁপিতে চাই আপনারে
আমারে পাড়ায় পাড়ায় খেপিয়ে বেড়ায় কোন্‌ খ্যাপা সে
আমারে তুমি অশেষ করেছ
আমারে তুমি কিসের ছলে পাঠাবে দূরে
আমারে দিই তোমার হাতে
আমায় অভিমানের বদলে আজ নেব তোমার মালা
আমায় মুক্তি যদি দাও বাঁধন খুলে
আমায় বাঁধবে যদি কাজের ডোরে
আমায় ভুলতে দিতে নাইকো তোমার ভয়
আমায় দাও গো ব’লে
আমি তারেই জানি তারেই জানি আমায় যে জন আপন জানে
আমি তারেই খুঁজে বেড়াই যে রয় মনে আমার মনে
আমি জ্বালব না মোর বাতায়নে প্রদীপ আনি
আমি কান পেতে রই ও আমার আপন হৃদয়গহন-দ্বারে বারে বারে
আমি কারে ডাকি গো
আমি কী ব’লে করিব নিবেদন
আমি কেমন করিয়া জানাব আমার জুড়ালো হৃদয় জুড়ালো
আমি জেনে শুনে তবু ভুলে আছি
আমি মারের সাগর পাড়ি দেব বিষম ঝড়ের বায়ে
আমি যখন ছিলেম অন্ধ
আমি হৃদয়েতে পথ কেটেছি
আমি বহু বাসনায় প্রাণপণে চাই
আমি আছি তোমার সভার দুয়ার-দেশে
আমি তোমায় যত শুনিয়েছিলাম গান
আমি দীন, অতি দীন
আমি যখন তাঁর দুয়ারে ভিক্ষা নিতে যাই
আমি সংসারে মন দিয়েছিনু
আমি হেথায় থাকি শুধু গাইতে তোমার গান
আর কত দূরে আছে সে আনন্দধাম
আর নহে, আর নয়
আর রেখো না আঁধারে, আমায় দেখতে দাও
আরাম-ভাঙা উদাস সুরে
আরো আঘাত সইবে আমার
আরো আরো প্রভু, আরো আরো
আরো চাই যে, আরো চাই গো– আরো যে চাই
আলো যে আজ গান করে মোর প্রাণে গো
আলোকের এই ঝর্ণাধারায় ধুইয়ে দাও
আলোয় আলোকময় করে হে এলে আলোর আলো
আসা-যাওয়ার মাঝখানে
ইচ্ছা যবে হবে লইয়ো পারে
উড়িয়ে ধ্বজা অভ্রভেদী রথে
এ অন্ধকার ডুবাও তোমার অতল অন্ধকারে
এ আবরণ ক্ষয় হবে গো ক্ষয় হবে
এ দিন আজি কোন্‌ ঘরে গো খুলে দিল দ্বার
এ পথ গেছে কোন্‌খানে গো কোন্‌খানে
এ পরবাসে রবে কে হায়
এ মণিহার আমায় নাহি সাজে
এ মোহ-আবরণ খুলে দাও, দাও হে
এ যে মোর আবরণ
এই মলিন বস্ত্র ছাড়তে হবে
এই আসা-যাওয়ার খেয়ার কূলে আমার বাড়ি
এই কথাটা ধরে রাখিস– মুক্তি তোরে পেতেই হবে
এই করেছ ভালো নিঠুর
এই তো তোমার আলোকধেনু সূর্য তারা দলে দলে
এই লভিনু সঙ্গ তব, সুন্দর হে সুন্দর
এই-যে কালো মাটির বাসা শ্যামল সুখের ধরা
এই-যে তোমার প্রেম, ওগো হৃদয়হরণ
এক হাতে ওর কৃপাণ আছে, আর-এক হাতে হার
একটি নমস্কারে, প্রভু, একটি নমস্কারে
একমনে তোর একতারাতে একটি যে তার সেইটি বাজা
একি এ সুন্দর শোভা ! কী মুখ হেরি এ
একি করুণা করুণাময়
একি লাবণ্যে পূর্ণ প্রাণ, প্রাণেশ হে
একি সুগন্ধহিল্লোল বহিল
এখন আমার সময় হল
এখনো আঁধার রয়েছে হে নাথ
এখনো গেল না আঁধার
এখনো ঘোর ভাঙে না তোর যে, মেলে না তোর আঁখি
এত আনন্দধ্বনি উঠিল কোথায়
এত আলো জ্বালিয়েছ এই গগনে
এবার দুঃখ আমার অসীম পাথার পার হল যে, পার হল
এবার রঙিয়ে গেল হৃদয়গগন সাঁঝের রঙে
এবার নীরব করে দাও হে তোমার মুখর কবিরে
এবার আমায় ডাকলে দূরে
এমনি করে ঘুরিব দূরে বাহিরে
এরে ভিখারি সাজায়ে কী রঙ্গ তুমি করিলে
এসেছে সকলে কত আশে দেখো চেয়ে
ও অকূলের কূল ও অগতির গতি
ও নিঠুর, আরো কি বাণ তোমার তূণে আছে
ওই অমল হাতে রজনী প্রাতে আপনি জ্বালো
ওই আলো যে যায় রে দেখা
ওই আসনতলের মাটির ‘পরে লুটিয়ে রব
ওই পোহাইল তিমিররাতি
ওই মরণের সাগরপারে চুপে চুপে
ওই রে তরী দিল খুলে
ওই শুনি যেন চরণধ্বনি রে
ওগো আমার প্রাণের ঠাকুর
ওগো সুন্দর, একদা কী জানি কোন্‌ পুণ্যের ফলে
ওগো, পথের সাথি, নমি বারম্বার
ওঠো ওঠো রে– বিফলে প্রভাত বহে যায় যে
ওদের কথায় ধাঁদা লাগে
ওদের সাথে মেলাও যারা চরায় তোমার ধেনু
ওরে পথিক, ওরে প্রেমিক
ওরে ভীরু, তোমার হাতে নাই ভূবনের ভার
ওরে, আগুন আমার ভাই
ওরে, কে রে এমন জাগায় তোকে
ওরে, তোরা যারা শুনবি না
ওহে সুন্দর, মরি মরি
ওহে জীবনবল্লভ, ওহে সাধনদুর্লভ
কণ্ঠে নিলেম গান
কত অজানারে জানাইলে তুমি
কবে আমি বাহির হলেম তোমারি গান গেয়ে
কান্নাহাসির-দোল-দোলানো পৌষ-ফাগুনের পালা
কামনা করি একান্তে
কার মিলন চাও বিরহী
কার হাতে এই মালা তোমার পাঠালে
কী গাব আমি, কী শুনাব, আজি আনন্দধামে
কী ভয় অভয়ধামে, তুমি মহারাজা– ভয় যায় তব নামে
কূল থেকে মোর গানের তরী
কে গো অন্তরতর সে
কে জানিত তুমি ডাকিবে আমারে, ছিলাম নিদ্রামগন
কে বসিলে আজি হৃদয়াসনে ভুবনেশ্বর প্রভু
কে যায় অমৃতধামযাত্রী
কে রে ওই ডাকিছে
কেন জাগে না, জাগে না অবশ পরান
কেন তোমরা আমায় ডাকো
কেন চোখের জলে ভিজিয়ে দিলেম না
কেন বাণী তব নাহি শুনি নাথ হে
কেন রে এই দুয়ারটুকু পার হতে সংশয়
কেমনে ফিরিয়া যাও না দেখি তাঁহারে
কেমনে রাখিবি তোরা তাঁরে লুকায়ে
কোথা হতে বাজে প্রেমবেদনা রে
কোথায় আলো কোথায় ওরে আলো
কোথায় তুমি, আমি কোথায়
কোন্‌ আলোতে প্রাণের প্রদীপ জ্বালিয়ে তুমি ধরায় আস
কোন্‌ খেলা যে খেলব কখন ভাবি বসে সেই কথাটাই
কোন্‌ শুভখনে উদিবে নয়নে অপরূপ রূপ-ইন্দু
কোলাহল তো বারণ হল, এবার কথা কানে কানে
ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু
ক্ষত যত ক্ষতি যত মিছে হতে মিছে
খেলার ছলে সাজিয়ে আমার গানের বাণী
গভীর রজনী নামিল হৃদয়ে, আর কোলাহল নাই
গরব মম হরেছ, প্রভু, দিয়েছ বহু লাজ
গাও বীণা– বীণা, গাও রে
গানে গানে তব বন্ধন যাক টুটে
গানের ঝরনাতলায় তুমি সাঁঝের বেলায় এলে
গানের ভিতর দিয়ে যখন দেখি ভুবনখানি
গানের সুরের আসনখানি পাতি পথের ধারে
গাব তোমার সুরে দাও সে বীণাযন্ত্র
গায়ে আমার পুলক লাগে, চোখে ঘনায় ঘোর
ঘাটে বসে আছি আনমনা
ঘোর দুঃখে জাগিনু, ঘনঘোরা যামিনী
চরণ ধরিতে দিয়ো গো আমারে
চরণধ্বনি শুনি তব, নাথ, জীবনতীরে
চলি গো, চলি গো, যাই গো চলে
চিরদিবস নব মাধুরী, নব শোভা তব বিশ্বে
চিরবন্ধু চিরনির্ভর চিরশান্তি
চিরসখা, ছেড়ো না মোরে ছেড়ো না
চোখের আলোয় দেখেছিলেম চোখের বাহিরে
ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী, একা একা করি খেলা
জগতে আনন্দযজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ
জগতে তুমি রাজা, অসীম প্রতাপ
জগৎ জুড়ে উদার সুরে আনন্দগান বাজে
জননী, তোমার করুণ চরণখানি
জরজর প্রাণে, নাথ, বরিষন করো তব প্রেমসুধা
জাগ জাগ রে জাগ সঙ্গীত
জাগিতে হবে রে
জাগে নাথ জোছনারাতে
জাগো নির্মল নেত্রে রাত্রির পরপারে
জাগো হে রুদ্র, জাগো
জাগ্রত বিশ্বকোলাহল-মাঝে
জানি গো, দিন যাবে এ দিন যাবে
জানি জানি তোমার প্রেমে সকল প্রেমের বাণী মেশে
জানি জানি কোন্‌ আদি কাল হতে
জানি নাই গো সাধন তোমার বলে কারে
জানি হে যবে প্রভাত হবে তোমার কৃপা-তরণী
জীবন যখন ছিল ফুলের মতো
জীবন যখন শুকায়ে যায় করুণাধারায় এসো
জীবনমরণের সীমানা ছাড়ায়ে
জীবনে আমার যত আনন্দ পেয়েছি দিবস-রাত
জীবনে যত পূজা হল না সারা
জড়ায়ে আছে বাধা, ছাড়ায়ে যেতে চাই
জয় জয় পরমা নিষ্কৃতি হে, নমি নমি
জয় তব বিচিত্র আনন্দ, হে কবি
জয় ভৈরব, জয় শঙ্কর
জয় হোক, জয় হোক নব অরুণোদয়
ডাকিছ কে তুমি তাপিত জনে তাপহরণ স্নেহকোলে
ডাকিছ শুনি জাগিনু প্রভু
ডাকিল মোরে জাগার সাথি
ডাকে বার বার ডাকে
ডাকো মোরে আজি এ নিশীথে
ডুবি অমৃতপাথারে– যাই ভুলে চরাচর
তব সিংহাসনের আসন হতে এলে তুমি নেমে
তব অমল পরশরস, তব শীতল শান্ত পুণ্যকর অন্তরে দাও
তাঁহারে আরতি করে চন্দ্র তপন, দেব মানব বন্দে চরণ
তাই তোমার আনন্দ আমার ‘পর
তার অন্ত নাই গো যে আনন্দে গড়া আমার অঙ্গ
তিমিরদুয়ার খোলো– এসো, এসো নীরবচরণে
তিমিরবিভাবরী কাটে কেমনে
তুই কেবল থাকিস সরে সরে
তুমি এবার আমায় লহো হে নাথ
তুমি নব নব রূপে এসো প্রাণে
তুমি একলা ঘরে বসে বসে কী সুর বাজালে
তুমি খুশি থাক আমার পানে চেয়ে চেয়ে
তুমি এ-পার ও-পার কর কে গো ওগো খেয়ার নেয়ে
তুমি ডাক দিয়েছ কোন্‌ সকালে কেউ তা জানে না
তুমি বাহির থেকে দিলে বিষম তাড়া
তুমি হঠাৎ-হাওয়ায় ভেসে-আসা ধন
তুমি আপনি জাগাও মোরে তব সুধাপরশে
তুমি আমাদের পিতা
তুমি কি এসেছ মোর দ্বারে
তুমি কেমন করে গান করো হে গুণী
তুমি ছেড়ে ছিলে, ভুলে ছিলে ব’লে হেরো গো কী দশা হয়েছে
তুমি জাগিছ কে
তুমি জানো, ওগো অন্তর্যামী
তুমি ধন্য ধন্য হে, ধন্য তব প্রেম
তুমি বন্ধু তুমি নাথ নিশিদিন তুমি আমার
তুমি যত ভার দিয়েছ সে ভার করিয়া দিয়েছ সোজা
তুমি যে চেয়ে আছ আকাশ ভ’রে
তুমি যে আমারে চাও আমি সে জানি
তুমি যে এসেছ মোর ভবনে
তুমি যে সুরের আগুন লাগিয়ে দিলে
তুমি সুন্দর, যৌবনঘন রসময় তব মূর্তি
তোমা লাগি, নাথ, জাগি জাগি হে
তোমা-হীন কাটে দিবস হে প্রভু
তোমার এই মাধুরী ছাপিয়ে আকাশ ঝরবে
তোমার সুর শুনায়ে যে ঘুম ভাঙাও
তোমার খোলা হাওয়া লাগিয়ে পালে টুকরো করে কাছি
তোমার আনন্দ ওই এল দ্বারে
তোমার অসীমে প্রাণ মন লয়ে যত দূরে আমি ধাই
তোমার আমার এই বিরহের অন্তরালে
তোমার কথা হেথা কেহ তো বলে না
তোমার কাছে এ বর মাগি
তোমার কাছে শান্তি চাব না
তোমার দুয়ার খোলার ধ্বনি ওই গো বাজে হৃদয়মাঝে
তোমার দেখা পাব ব’লে এসেছি-যে সখা
তোমার দ্বারে কেন আসি ভুলেই যে যাই
তোমার নয়ন আমায় বারে বারে
তোমার পতাকা যারে দাও তারে বহিবারে দাও শকতি
তোমার পূজার ছলে তোমায় ভুলেই থাকি
তোমার প্রেমে ধন্য কর যারে
তোমার বীণা আমার মনোমাঝে
তোমার সুরের ধারা ঝরে যেথায় তারি পারে
তোমার সোনার থালায় সাজাব আজ দুখের অশ্রুধার
তোমার সোনার থালায় সাজাব আজ দুখের অশ্রুধার
তোমার হাতের অরুণলেখা পাবার লাগি রাতারাতি
তোমার হাতের রাখীখানি বাঁধো আমার দখিন-হাতে
তোমারি ঝরনাতলার নির্জনে
তোমারি ইচ্ছা হউক পূর্ণ করুণাময় স্বামী
তোমারি গেহে পালিছ স্নেহে, তুমি ধন্য ধন্য হে
তোমারি নাম বলব নানা ছলে
তোমারি নামে নয়ন মেলিনু পুণ্যপ্রভাতে আজি
তোমারি মধুর রূপে ভরেছ ভুবন
তোমারি রাগিণী জীবনকুঞ্জে
তোমারি সেবক করো হে আজি হতে আমারে
তোমায় নতুন করেই পাব বলে হারাই ক্ষণে ক্ষণ
তোমায় আমায় মিলন হবে ব’লে আলোয় আকাশ ভরা
তোমায় কিছু দেব ব’লে চায় যে আমার মন
তোমায় চেয়ে আছি বসে পথের ধারে সুন্দর হে
তোর ভিতরে জাগিয়া কে যে
তোর শিকল আমায় বিকল করবে না
তোরা শুনিস নি কি শুনিস নি তার পায়ের ধ্বনি
দাঁড়াও মন, অনন্ত ব্রহ্মাণ্ড-মাঝে আনন্দসভাভবনে আজ
দাঁড়াও আমার আঁখির আগে
দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার গানের ও পারে
দাও হে আমার ভয় ভেঙে দাও
দিন অবসান হল
দিন ফুরালো হে সংসারী
দিন যদি হল অবসান
দিন যায় রে দিন যায় বিষাদে
দিনের বেলায় বাঁশি তোমার বাজিয়েছিলে অনেক সুরে
দীর্ঘ জীবনপথ, কত দুঃখতাপ, কত শোকদহন
দুঃখ যদি না পাবে তো
দুঃখ যে তোর নয় রে চিরন্তন
দুঃখরাতে, হে নাথ, কে ডাকিলে
দুঃখের তিমিরে যদি জ্বলে তব মঙ্গল-আলোক
দুঃখের বরষায় চক্ষের জল যেই নামল
দুখ দিয়েছ, দিয়েছ ক্ষতি নাই
দুখের বেশে এসেছ ব’লে তোমারে নাহি ডরিব হে
দুয়ারে দাও মোরে রাখিয়া
দূরে কোথায় দূরে দূরে
দেওয়া নেওয়া ফিরিয়ে-দেওয়া তোমায় আমায়
দেবতা জেনে দূরে রই দাঁড়ায়ে
দেবাধিদেব মহাদেব
দয়া দিয়ে হবে গো মোর জীবন ধুতে
ধনে জনে আছি জড়ায়ে হায়
ধায় যেন মোর সকল ভালোবাসা
ধীরে বন্ধু ধীরে ধীরে
ধ্বনিল আহ্বান মধুর গম্ভীর প্রভাত-অম্বর-মাঝে
নদীপারের এই আষাঢ়ের প্রভাতখানি
নব আনন্দে জাগো আজি নবরবিকিরণে
নমি নমি চরণে
না বাঁচাবে আমায় যদি মারবে কেন তবে
না রে, না রে, হবে না তোর স্বর্গসাধন
নাই বা ডাকো রইব তোমার দ্বারে
নাথ হে, প্রেমপথে সব বাধা ভাঙিয়া দাও
নিকটে দেখিব তোমারে করেছি বাসনা মনে
নিত্য তোমার যে ফুল ফোটে ফুলবনে
নিত্য নব সত্য তব শুভ্র আলোকময়
নিবিড় ঘন আঁধারে জ্বলিছে ধ্রুবতারা
নিভৃত প্রাণের দেবতা যেখানে জাগেন একা
নিশা-অবসানে কে দিল গোপনে আনি
নিশার স্বপন ছুটল রে, এই ছুটল রে
নিশিদিন চাহো রে তাঁর পানে
নিশিদিন মোর পরানে প্রিয়তম মম
নিশীথশয়নে ভেবে রাখি মনে, ওগো অন্তরযামী
নীরবে আছ কেন বাহিরদুয়ারে
নূতন প্রাণ দাও, প্রাণসখা, আজি সুপ্রভাতে
নয় এ মধুর খেলা
নয়ন ছেড়ে গেলে চলে, এলে সকল-মাঝে
নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে, রয়েছ নয়নে নয়নে
নয়ান ভাসিল জলে
পথ এখনো শেষ হল না, মিলিয়ে এল দিনের ভাতি
পথ চেয়ে যে কেটে গেল কত দিনে রাতে
পথ দিয়ে কে যায় গো চলে
পথিক হে, ওই-যে চলে, ওই-যে চলে সঙ্গী তোমার দলে দলে
পথে চলে যেতে যেতে কোথা কোন্‌খানে
পথে যেতে ডেকেছিলে মোরে
পথের শেষ কোথায়, শেষ কোথায়, কী আছে শেষে
পাতার ভেলা ভাসাই নীরে
পাত্রখানা যায় যদি যাক ভেঙেচুরে
পাদপ্রান্তে রাখ সেবকে
পান্থ তুমি, পান্থজনের সখা হে
পান্থ, এখনো কেন অলসিত অঙ্গ
পারবি না কি যোগ দিতে এই ছন্দে রে
পিনাকেতে লাগে টঙ্কার
পিপাসা হায় নাহি মিটিল, নাহি মিটিল
পুষ্প দিয়ে মারো যারে চিনল না সে মরণকে
পূর্ণ-আনন্দ পূর্ণমঙ্গলরূপে হৃদয়ে এসো
পূর্বগগনভাগে
পেয়েছি অভয়পদ, আর ভয় কারে
পেয়েছি ছুটি, বিদায় দেহো ভাই
পেয়েছি সন্ধান তব অন্তর্যামী, অন্তরে দেখেছি তোমারে
প্রচণ্ড গর্জনে আসিল একি দুর্দিন
প্রতিদিন আমি হে জীবনস্বামী
প্রতিদিন তব গাথা গাব আমি সুমধুর
প্রথম আদি তব শক্তি
প্রথম আলোর চরণধ্বনি উঠল বেজে যেই
প্রভাতে বিমল আনন্দে বিকশিত কুসুমগন্ধে
প্রভু তোমা লাগি আঁখি জাগে
প্রভু বলো বলো কবে
প্রভু আমার প্রিয় আমার পরম ধন হে
প্রভু, আজি তোমার দক্ষিণ হাত রেখো না ঢাকি
প্রভু, তোমার বীণা যেমনি বাজে
প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে
প্রাণে খুশির তুফান উঠেছে
প্রাণে গান নাই, মিছে তাই ফিরিনু যে
প্রাণের প্রাণ জাগিছে তোমারি প্রাণে
প্রেমানন্দে রাখো পূর্ণ আমারে দিবসরাত
প্রেমে প্রাণে গানে গন্ধে আলোকে পুলকে
ফুল বলে, ধন্য আমি মাটির ‘পরে
ফেলে রাখলেই কি পড়ে রবে ও অবোধ
বজ্রে তোমার বাজে বাঁশি
বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি
বর্ষ গেল, বৃথা গেল, কিছুই করি নি হায়
বল তো এইবারের মতো
বল দাও মোরে বল দাও
বসে আছি হে কবে শুনিব তোমার বাণী
বহে নিরন্তর অনন্ত আনন্দধারা
বাঁচান বাঁচি, মারেন মরি
বাঁধন ছেঁড়ার সাধন হবে
বাজাও আমারে বাজাও
বাজাও তুমি কবি, তোমার সঙ্গীত সুমধুর
বাজে বাজে রম্যবীণা বাজে
বাণী তব ধায় অনন্ত গগনে লোকে লোকে
বাধা দিলে বাধবে লড়াই, মরতে হবে
বারে বারে পেয়েছি যে তারে
বাহিরে ভুল ভাঙবে যখন অন্তরে ভুল ভাঙবে কি
বিপদে মোরে রক্ষা করো এ নহে মোর প্রার্থনা
বিপদে মোরে রক্ষা করো এ নহে মোর প্রার্থনা
বিপুল তরঙ্গ রে, বিপুল তরঙ্গ রে
বিমল আনন্দে জাগো রে
বিমল আনন্দে জাগো রে
বিশ্ব যখন নিদ্রামগন, গগন অন্ধকার
বিশ্বজোড়া ফাঁদ পেতেছ
বিশ্বসাথে যোগে যেথায় বিহারো
বীণা বাজাও হে মম অন্তরে
বুঝেছি কি বুঝি নাই বা সে তর্কে কাজ নাই
বেঁধেছ প্রেমের পাশে ওহে প্রেমময়
বেলা গেল তোমার পথ চেয়ে
বেসুর বাজে রে
ব্যাকুল প্রাণ কোথা সুদূরে ফিরে
ভক্ত করিছে প্রভুর চরণে জীবনসমর্পণ
ভক্তহৃদিবিকাশ প্রাণবিমোহন
ভুবন হইতে ভুবনবাসী এসো আপন হৃদয়ে
ভুবনজোড়া আসনখানি
ভুবনেশ্বর হে মোচন কর বন্ধন সব মোচন কর
ভুলে যাই থেকে থেকে
ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে
ভেঙেছ দুয়ার, এসেছ জ্যোতির্ময়, তোমারি হউক জয়
ভোর হল বিভাবরী, পথ হল অবসান
ভোরের বেলা কখন এসে পরশ করে গেছে হেসে
ভয় হতে তব অভয়মাঝে
ভয় হয় পাছে তব নামে আমি আমারে করি প্রচার হে
ভয়েরে মোর আঘাত করো ভীষণ
মধুর রূপে বিরাজ হে বিশ্বরাজ
মধুর, তোমার শেষ যে না পাই প্রহর হল শেষ
মন রে ওরে মন, তুমি কোন্‌ সাধনার ধন
মন, জাগ’ মঙ্গললোকে অমল অমৃতময় নব আলোকে
মনোমোহন, গহন যামিনীশেষে
মন্দিরে মম কে আসিলে হে
মম অঙ্গনে স্বামী আনন্দে হাসে
মরণসাগরপারে তোমরা অমর
মরণের মুখে রেখে দূরে যাও দূরে যাও চলে
মহাবিশ্বে মহাকাশে মহাকাল-মাঝে
মহারাজ, একি সাজে এলে হৃদয়পুরমাঝে
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না
মালা হতে খসে-পড়া ফুলের একটি দল
মেঘ বলেছে ‘যাব যাব’, রাত বলেছে ‘যাই
মোর প্রভাতের এই প্রথম খনের কুসুমখানি
মোর পথিকেরে বুঝি এনেছ এবার মোর করুণ রঙিন পথ
মোর মরণে তোমার হবে জয়
মোর সন্ধ্যায় তুমি সুন্দরবেশে এসেছ
মোর হৃদয়ের গোপন বিজন ঘরে
মোরে বারে বারে ফিরালে
মোরে ডাকি লয়ে যাও মুক্তদ্বারে তোমার বিশ্বের সভাতে
যখন তুমি বাঁধছিলে তার সে যে বিষম ব্যথা
যখন তোমায় আঘাত করি তখন চিনি
যতখন তুমি আমায় বসিয়ে রাখ বাহির-বাটে
যতবার আলো জ্বালাতে চাই
যদি তোমার দেখা না পাই প্রভু
যদি আমায় তুমি বাঁচাও
যদি ঝড়ের মেঘের মতো আমি ধাই চঞ্চল-অন্তর
যদি প্রেম দিলে না প্রাণে
যদি এ আমার হৃদয়দুয়ার
যা হারিয়ে যায় তা আগলে বসে
যা পেয়েছি প্রথম দিনে সেই যেন পাই শেষে
যা হবার তা হবে
যাত্রাবেলায় রুদ্র রবে বন্ধনডোর ছিন্ন হবে
যাদের চাহিয়া তোমারে ভুলেছি তারা তো চাহে না আমারে
যারা কথা দিয়ে তোমার কথা বলে
যারা কাছে আছে তারা কাছে থাক্‌
যারে নিজে তুমি ভাসিয়েছিলে দুঃখধারার ভরা স্রোতে
যিনি সকল কাজের কাজী
যে থাকে থাক-না দ্বারে
যে দিন ফুটল কমল কিছুই জানি নাই
যে ধ্রুবপদ দিয়েছ বাঁধি বিশ্বতানে
যে রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাঙল ঝড়ে
যে রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাঙল ঝড়ে
যে-কেহ মোরে দিয়েছ সুখ দিয়েছ তাঁরি পরিচয়
যেতে যদি হয় হবে
যেতে যেতে একলা পথে
যেতে যেতে একলা পথে নিবেছে মোর বাতি
যেতে যেতে চায় না যেতে
যেথায় তোমার লুট হতেছে ভুবনে
যেথায় থাকে সবার অধম দীনের হতে দীন
রজনীর শেষ তারা, গোপনে আঁধারে আধো-ঘুমে
রহি রহি আনন্দতরঙ্গ জাগে
রাখো রাখো রে জীবনে জীবনবল্লভে
রাজপুরীতে বাজায় বাঁশি বেলাশেষের তান
রাত্রি এসে যেথায় মেশে দিনের পারাবারে
রুদ্রবেশে কেমন খেলা, কালো মেঘের ভ্রূকুটি
রূপসাগরে ডুব দিয়েছি অরূপরতন আশা করি
লক্ষ্মী যখন আসবে তখন কোথায় তারে দিবি রে ঠাঁই
লহো লহো তুলি লও হে ভূমিতল হতে ধূলিম্লান এ পরান
লহো লহো, তুলে লহো নীরব বীণাখানি
লুকিয়ে আস আঁধার রাতে
শক্তিরূপে হেরো, তাঁর
শান্ত হ রে মম চিত্ত নিরাকুল
শান্তি করো বরিষন নীরব ধারে, নাথ, চিত্তমাঝে
শান্তিসমুদ্র তুমি গভীর
শীতল তব পদছায়া, তাপহরণ তব সুধা
শুধু কি তার বেঁধেই তোর কাজ ফুরাবে
শুধু তোমার বাণী নয় গো
শুনেছে তোমার নাম অনাথ আতুর জন
শুভ্র আসনে বিরাজ’ অরুণছটামাঝে
শুভ্র নব শঙ্খ তব গগন ভরি বাজে
শূন্য প্রাণ কাঁদে সদা– প্রাণেশ্বর
শূন্য হাতে ফিরি, হে নাথ, পথে পথে
শেষ নাহি যে, শেষ কথা কে বলবে
শোনো তাঁর সুধাবাণী শুভমুহূর্তে শান্তপ্রাণে
শ্রান্ত কেন ওহে পান্থ, পথপ্রান্তে বসে একি খেলা
শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে
সংশয়তিমিরমাঝে না হেরি গতি হে
সংসার যবে মন কেড়ে লয়, জাগে না যখন প্রাণ
সংসারে কোনো ভয় নাহি নাহি
সংসারে তুমি রাখিলে মোরে যে ঘরে
সকল গর্ব দূর করি দিব
সকল জনম ভ’রে ও মোর দরদিয়া
সকল ভয়ের ভয় যে তারে কোন্‌ বিপদে কাড়বে
সকলকলুষতামসহর, জয় হোক তব জয়–
সকাল-সাঁজে ধায় যে ওরা নানা কাজে
সত্য মঙ্গল প্রেমময় তুমি, ধ্রুবজ্যোতি তুমি অন্ধকারে
সদা থাকো আনন্দে, সংসারে নির্ভয়ে নির্মলপ্রাণে
সন্ধ্যা হল গো– ও মা
সফল করো হে প্রভু আজি সভা
সবাই যারে সব দিতেছে তার কাছে সব দিয়ে ফেলি
সবার মাঝারে তোমারে স্বীকার করিব হে
সবে আনন্দ করো
সভায় তোমার থাকি সবার শাসনে
সর্ব খর্বতারে দহে তব ক্রোধদাহ
সহজ হবি, সহজ হবি, ওরে মন, সহজ হবি
সারা জীবন দিল আলো সূর্য গ্রহ চাঁদ
সার্থক কর সাধন
সীমার মাঝে অসীম তুমি বাজাও আপন সুর
সুখহীন নিশিদিন পরাধীন হয়ে ভ্রমিছ দীনপ্রাণে
সুখে আমায় রাখবে কেন
সুখে আমায় রাখবে কেন, রাখো তোমার কোলে
সুন্দর বটে তব অঙ্গদখানি তারায় তারায় খচিত
সুন্দর বহে আনন্দমন্দানিল
সুর ভুলে যেই ঘুরে বেড়াই কেবল কাজে
সুরের গুরু, দাও গো সুরের দীক্ষা
সে দিনে আপদ আমার যাবে কেটে
সে যে মনের মানুষ, কেন তারে বসিয়ে রাখিস নয়নদ্বারে
সেই তো আমি চাই
স্বপন যদি ভাঙিলে রজনীপ্রভাতে
স্বামী, তুমি এসো আজ অন্ধকার হৃদয়মাঝে
হবে জয়, হবে জয়,হবে জয় রে
হরষে জাগো আজি, জাগো রে তাঁহার সাথে