BDELIBRARY





বিচিত্র

রবীন্দ্র রচনাবলী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর




আঁধারের লীলা আকাশে
আকাশ হতে আকাশ-পথে হাজার স্রোতে
আকাশ, তোমায় কোন্‌ রূপে মন চিনতে পারে
আকাশে তোর তেমনি আছে ছুটি
আজ তারায় তারায় দীপ্ত শিখার অগ্নি জ্বলে
আধেক ঘুমে নয়ন চুমে
আনন্দেরই সাগর হতে এসেছে আজ বান
আপন-মনে গোপন কোণে
আমরা চাষ করি আনন্দে
আমরা না-গান-গাওয়ার দল রে
আমরা খুঁজি খেলার সাথি
আমরা নূতন যৌবনেরই দূত
আমরা লক্ষ্মীছাড়ার দল
আমাকে যে বাঁধবে ধরে
আমাদের ভয় কাহারে
আমাদের পাকবে না চুল গো
আমাদের শান্তিনিকেতন আমাদের
আমার অন্ধপ্রদীপ শূন্য-পানে চেয়ে আছে
আমার ঘুর লেগেছে– তাধিন্‌ তাধিন্
আমার নাইবা হল পারে যাওয়া
আমার জীর্ণ পাতা যাবার বেলায় বারে বারে
আমার যাবার সময় হল
আমারে বাঁধবি তোরা
আমারে ডাক দিল কে ভিতর পানে
আমায় ক্ষমো হে ক্ষমো
আমি একলা চলেছি এ ভবে
আমি শ্রাবণ-আকাশে ওই দিয়েছি পাতি
আমি কেবলই স্বপন করেছি বপন বাতাসে
আমি তোমারি মাটির কন্যা
আমি ফিরব না রে
আমি সন্ধ্যাদীপের শিখা
আমি সব নিতে চাই
আমি চঞ্চল হে
আমিই শুধু রইনু বাকি
আলো আমার আলো ওগো আলো ভুবন-ভরা
আলোক-চোরা লুকিয়ে এল ওই
আয় আয় রে পাগল
এ শুধু অলস মায়া
এই তো ভালো লেগেছিল আলোর নাচন
এবার যমের দুয়োর খোলা পেয়ে ছুটেছে সব ছেলেমেয়ে
এমনি ক’রেই যায় যদি দিন যাক না
এসো গো নূতন জীবন
ও কি এল, ও কি এল না
ও জোনাকী, কী সুখে ওই ডানা দুটি মেলেছ
ও ভাই কানাই কারে জানাই দুঃসহ মোর দুঃখ
ওই সাগরের ঢেউয়ে ঢেউয়ে বাজল ভেরী
ওগো তোমরা সবাই ভালো
ওগো ভাগ্যদেবী পিতামহী
ওগো তোরা কে যাবি পারে
ওগো নদী আপন বেগে পাগল-পারা
ওগো পুরবাসী আমি দ্বারে দাঁড়ায়ে
ওঠো রে মলিনমুখ, চলো এইবার
ওর ভাব দেখে যে পায় হাসি
ওরে প্রজাপতি মায়া দিয়ে কে
ওরে শিকল তোমায় কোলে করে দিয়েছি ঝঙ্কার
ওরে সাবধানী পথিক
ওরে ওরে ওরে আমার মন মেতেছে
ওরে মাঝি ওরে আমার মানবজন্মতরীর মাঝি
ওরে যেতে হবে আর দেরি নাই
কঠিন লোহা কঠিন ঘুমে ছিল অচেতন
কমলবনের মধুপরাজি
কাঁটাবনবিহারিণী সুর-কানা দেবী
কী পাই নি তারি হিসাব মিলাতে
কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি
কেন যে মন ভোলে আমার
কোথায় ফিরিস পরম শেষের অন্বেষণে
কোন্‌ সুদূর হতে আমার মনোমাঝে
খরবায়ু বয় বেগে চারি দিক ছায় মেঘে
খেলাঘর বাঁধতে লেগেছি আমার মনের ভিতরে
গগনে গগনে ধায় হাঁকি
গোপন প্রাণে একলা মানুষ যে
গ্রামছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ
চাহিয়া দেখো রসের স্রোতে রঙের খেলাখানি
চোখ যে ওদের ছুটে চলে গো
ছিল যে পরানের অন্ধকারে
জাগ’ আলসশয়নবিলগ্ন
জীবন আমার চলছে যেমন তেমনি ভাবে
তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায়
তরীতে পা দিই নি আমি
তিমিরময় নিবিড় নিশা
তুমি উষার সোনার বিন্দু প্রাণের সিন্ধুকূলে
তুমি কি কেবলই ছবি
তোমরা হাসিয়া বহিয়া চলিয়া যাও
তোমাদের দান যশের ডালায়
তোমার আসন শূন্য আজি
তোমার হল শুরু আমার হল সারা
দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইল না
দুই হাতে– কালের মন্দিরা
দুয়ার মোর পথপাশে
দূর রজনীর স্বপন লাগে
দূরদেশী সেই রাখাল ছেলে
দেখা না-দেখায় মেশা
নমো যন্ত্র নমো– যন্ত্র
না গো এই যে ধুলা আমার না
নাই ভয় নাই ভয় নাই রে
নাহয় তোমার যা হয়েছে তাই হল
নৃত্যের তালে তালে নটরাজ
পরবাসী চলে এসো ঘরে
পাখি বলে চাঁপা আমারে কও
পাগল যে তুই কণ্ঠ ভরে
পায়ে পড়ি শোনো ভাই গাইয়ে
প্রলয়-নাচন নাচলে যখন আপন ভুলে
প্রাঙ্গণে মোর শিরীষশাখায় ফাগুন মাসে
ফিরে ফিরে আমায় মিছে ডাকো
ফুরোলো ফুরোলো এবার পরীক্ষার এই পালা
বাজে গুরু গুরু শঙ্কার ডঙ্কা
ভাঙো বাঁধ ভেঙে দাও
ভালোমানুষ নই রে মোরা
মধুর মধুর ধ্বনি বাজে
মম চিত্তে নিতি নৃত্যে কে যে নাচে
মাটির বুকের মাঝে বন্দী যে জল
মাটির প্রদীপখানি আছে মাটির ঘরের কোলে
মেঘেরা চলে চলে যায়
মোদের যেমন খেলা তেমনি যে কাজ
মোদের কিছু নাই রে নাই
মোরা সত্যের ‘পরে মন আজি করিব সমর্পণ
যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে
যাবই আমি যাবই ওগো
যাহা পাও তাই লও
যুদ্ধ যখন বাধিল অচলে চঞ্চলে
যে আমি ওই ভেসে চলে
যে কাঁদনে হিয়া কাঁদিছে
যে কেবল পালিয়ে বেড়ায়
রাঙিয়ে দিয়ে যাও
রয় যে কাঙাল শূন্য হাতে
শুধু যাওয়া আসা শুধু স্রোতে ভাসা
সকাল-বেলার কুঁড়ি আমার বিকালে যায় টুটে
সন্ন্যাসী যে জাগিল ওই
সব কাজে হাত লাগাই মোরা
সারা বরষ দেখি নে
সুন্দরের বন্ধন নিষ্ঠুরের হাতে
সে কোন্‌ বনের হরিণ
সে কোন্‌ পাগল যায়
স্বপন-পারের ডাক শুনেছি
হাটের ধুলা সয় না যে আর
হারে রে রে রে রে
হায় হায় রে হায় পরবাসী
হায় হায় হায় দিন চলি যায়
হে আকাশবিহারী-নীরদবাহন জল
হ্যাদে গো নন্দরানী